Ticker

7/recent/ticker-posts

মানুষ খেকো গাছ | ভেনাস ফ্লাইট্রাপ

মানুষ খেকো গাছের গল্প ছোট বেলা থেকে তো অনেক শুনেছি। আর কার্টুনেও দেখতাম গাছের হাত আছে। চোখ আছে, মুখ আছে, কান আছে। মুখ দিয়ে কথাও বলে সেই গাছ। আর গাছের কাছে গেলে সেই গাছ মানুষদের খেয়ে ফেলে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভেবে দেখেছি কি এটা কি শুধু কাল্পনিক, কিংবা রূপকথার গল্পই? যা কিনা কার্টুনে রূপান্তর করা হয়েছে। আর বাচ্চাদের শোনার জন্য গল্প হয়েছে!? আসুন তবে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি। 

Venues Flitrap

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে মানুষ খেকো গাছ আছে। 😲

কি চমকে গেলেন তো? হা হা... একটু মজা করলাম আপনাদের কৌতুহল কে নিয়ে।

আসলে বিষয় টা সেরকম না। পৃথিবীতে এমন এক প্রকার গাছ আছে যেই গাছ কিনা পোকা খেয়ে বেঁচে থাকে। এই গাছের পাতাগুলো মানুষের মুখের চোয়ালের মতো। পৃথিবীতে এই ধরনের গাছের বিভিন্ন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। এমনকি আমাদের দেশের বিখ্যাত জেলা সিলেটেও এই গাছের দেখা মিলে। সিলেটের এই প্রজাতির গাছকে আমরা কলস গাছ হিসেবে চিনি অনেকে।

কলসি গাছ

এই গাছটি দেখতে অনেকটা কলসের মতোই। এ কলসের মধ্যে লাল রঙের মধুর মতো এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে। যেখানে মধু সেখানে তো পোকামাকড় আসাটাই স্বাভাবিক। এই কলসির মতো কাঠামোর মধ্যে যখন কোনো পোকামাকড় মধু খেতে আসে তখন পা পিছলে এর ভিতর পড়ে যায়। পোকা ভিতরে চলে যাওয়া মাত্রই এই গাছের কলসির মুখের সামনের সাইট আপনা আপনিই আটকে যায়। পরবর্তীতে গাছটি পোকাকে এক বিশেষ উপায়ে হজম করে ফেলে। 

আজ পর্যন্ত এই গাছের সেরা এবং অন্যতম প্রজাতি টি হলো ভেনাস ফ্লাইট্রাপ। আমেরিকার সাউথ এবং নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ায় এই উদ্ভিদ বা গাছ ব্যপকভাবে পাওয়া যায়। 

ভেনাস ফ্লাইট্রাপের গঠন ও খাদ্যাভ্যাস :

এই গাছের পাতাগুলো খুব সংবেদনশীল। ভেনাস ফ্লাইট্রাপের ব্যাস প্রায় ইঞ্চি হয়ে থাকে। ফাঁদের মতো দেখতে এদের কম অথবা বেশী ছয়টি করে পাতা থাকে। প্রতিটি পাতার প্রান্তে দাঁত থাকে। যখন পাতাগুলো একত্রিত হয়ে যায় তখন একটি ফাঁদ গঠিত হয়। ফাঁদ গঠনের সময় প্রতিটি পাতা ইঞ্চি পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। এই গাছের পাতার ক্ষমতা এতো বেশি যে সেকেন্ডের কম সময়ের মধ্যে পাতাগুলো বন্ধ করে ফেলে। প্রতিটি  পাতাতেই লোম থাকে যা তার শিকার কে বের হতে বাধা দেয় আটকে রাখতে সাহায্য করে। পাতা থেকে এক ধরনের বিশেষ রস বের হয় যা পোকা হজম করতে অবদান রাখে। এইভাবে একটি পোকা হজম করতে ভেনাস ফ্লাইট্রাপের ১০ দিন সময় লাগে। শিকারের সময় এদের পাতাগুলো আন্দোলিত হয়। এদের প্রধান খাবার পিঁপড়া, মাছি, পোকা। এমনকি ক্ষুদ্র মাকড়সা এবং ক্ষুদ্র ব্যাঙও এরা খেতে পারে। অন্যান্য উদ্ভিদের মতো এদেরও পানি, গ্যাস,  সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়ে থাকে। 

 উদ্ভিদ গুলোর আচরণ অন্যান্য   উদ্ভিদের থেকে আলাদা এবং   অস্বাভাবিক হওয়ার কারণ কি!?   বিজ্ঞান কি বলে!?

এই গাছ গুলোর বেঁচে থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেনের প্রয়োজন হয়। যা কিনা মাটি থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পায় না। আর এই না পাওয়ার দরুন এই গাছ মাংসাশী তে পরিনত হয়েছে। কিছু বিজ্ঞানী ধারণা করেন যে, পরবর্তী পরিবেশে টিকে থাকার প্রয়োজনে বিবর্তনের মাধ্যমে এসব উদ্ভিদ মাংসাশী তে পরিনত হয়েছে। 

তবে মানুষ খাওয়ার ব্যপার টা কেবল গল্পই মাত্র! মানুষের মাংস না খেলেও পোকা মাকরের মাংস তো খায়। মানুষ খেকো না বললেও পোকামাকড় খেকো তো বলতেই পারি!

পোকামাকড় খেকো গাছ😅



Post a Comment

0 Comments