Ticker

7/recent/ticker-posts

Ancient History of Madaripur District | মাদারীপুর জেলার প্রাচীন ইতিহাস

 

Madaripur jelar itihas

মাদারীপুর ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি জনপদ। এর একদিকে আড়িয়াল খাঁ ও অন্যদিকে কুমার নদ প্রবাহিত। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে গ্রীকবীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমনকালে ‘গঙ্গারিডি’ রাজ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকদের মতে,  ‘গঙ্গারিডি’র রাজ্যের রাজধানী ছিলো গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায়। কোটালিপাড়া চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যেরও একটি প্রধান জনপদ ছিলো। পেরিপ্লাসের গ্রন্থ ও টলেমীর বিবরণ হতে জানা যায় যে,  খ্রীষ্টীয় প্রথম শতকে কুষান বংশের শাসনামলেও বাংলায় গঙ্গারিডি রাজ্য প্রবল ছিলো।১৫  ধারণা করা যায়, ভারতীয় গঙ্গাহৃদ শব্দের গ্রিক রূপ হলো গঙ্গারিডি, গঙ্গারিড্ডি, গঙ্গারিডাই বা গঙ্গারিডেই প্রভৃতি। গঙ্গা ও ভাগীরথীর মধ্যবর্তী ভূভাগকে গঙ্গাহৃদ বলা হত।

অতি প্রাচীনকালে মাদারীপুরের পূর্বাংশ ইদিলপুর এবং পশ্চিম অংশ কোটালীপাড়া নামে পরিচিত ছিলো। ইদিলপুর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের একটি উন্নত জনপদ ছিল। তখন এ অঞ্চলের প্রশাসনিক নাম ছিলো নাব্যমন্তুল। কোটালীপাড়া ছিলো বাংলার প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্র। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতকে ইদিলপুর ও কোটালীপাড়া ব্যবসা বানিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিলো।১৬

মাদারীপুর জনপদসমূহ কয়েক শতাব্দী ব্যাপী গুপ্ত, পাল, চন্দ্র ও সেন প্রভৃতি হিন্দু ও বৌদ্ধ রাজবংশের শাসনাধীনে ছিল। ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, মাদারীপুর জেলাসহ দক্ষিণ বাংলার বহু অঞ্চল সমুদ্র গুপ্তের রাজত্বকালে (৩৪০-৩৮০ খ্রিঃ) সর্ব প্রথম গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ষষ্ঠ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত এ অঞ্চলে গুপ্ত রাজগনের প্রভুত্ব বজায় থাকে। সপ্তম শতকে এ জনপদ রাজা শশাঙ্কের নিয়ন্ত্রণে আসে। পরবর্তীকালে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্রবংশীয় রাজাগণ দীর্ঘকাল (দশম শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকে একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত) এ অঞ্চলের উপর তাদের প্রভুত্ব বজায় রেখেছিলেন। এরপর পর্যায়ক্রমে পালবংশীয় বৌদ্ধ ও সেন বংশীয় ব্রাক্ষন্যবাদী হিন্দু রাজন্যবর্গ এ অঞ্চল শাসন করেন। ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির নেতৃত্বে উত্তর ও পশ্চিমবঙ্গ বিজিত হলেও পরবর্তী আরও প্রায় দেড় শতাব্দী কাল এ অঞ্চল সেন শাসনাধীনে রয়ে যায়। 

❝পড়ুন — মাদারীপুর জেলার ভৌগোলিক বিবরণ 

সেন রাজাদের পতনের পর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ফরিদপুর জেলার একাংশ, বরিশাল বিভাগ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, পটুয়াখালী ও বাগেরহাট জেলার পূর্বাংশ নিয়ে প্রাচীনকালের চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য গঠিত হয়। চন্দ্রদ্বীপ মোগল পূর্ব যুগের একটি ক্ষুদ্র রাজ্য ছিল। মোগল আমলে চন্দ্রদ্বীপ নামের জমিদারিকে সরকার বাকলার নামানুসারে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ বলা হত। প্রাগৈতিহাসিক যুগে চন্দ্রদ্বীপ অঞ্চলে অস্ট্রিক ও মোঙ্গলীও জনগোষ্ঠী বাস করত এবং তাদের সংমিশ্রণে বাঙ্ জাতির উৎপত্তি হয়। বাঙ্ জাতি থেকে সৃষ্ট চণ্ডাল জাতি চন্দ্রদ্বীপের প্রধান জনগোষ্ঠী ছিল।১৭ বর্তমানে এরা নমঃশূদ্র নামে পরিচিত।১৮

চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের সময়ে (১৩০১-১৩২২ খ্রিঃ) এ অঞ্চল সেন শাসন থেকে মুসলিম শাসনাধীনে চলে আসে। সুলতান রুকন উদ্দিন বরবক শাহ্ (১৪৫৯-১৪৭৪ খ্রিঃ) প্রথম ফরিদপুর-চন্দ্রদ্বীপ দখল করেন। সুলতান জালাল উদ্দীন ফতেহ শাহ্ (১৪৮১-১৪৮৫ খ্রিঃ) ফরিদপুর ও চন্দ্রদ্বীপের একাংশ দখল করে ফতেহাবাদ পরগণা গঠন করেন। ফরিদপুর-মাদারীপুরের প্রথম ঐতিহাসিক নাম ফতেহাবাদ১৯ পরবর্তীতে এ অঞ্চলে মোগল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।মোগল আমলেও ফরিদপুর-মাদারীপুর ফতেহাবাদ নামে স্বীকৃত হয়। তখন বলা হত মূল্লুকে ফতেহাবাদ।২০ সুলতান হুশেন শাহ্ (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রিঃ) ফতেহাবাদের জনপ্রিয় শাসক ছিলেন। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট আকবর সমগ্র সাম্রাজ্যকে মোট ১২ টি সুবায় এবং সুবা বাঙলাকে ১৬ টি সরকার বা রাজস্ব বিভাগে বিভক্ত করেন। বর্তমান মাদারীপুর জেলাধীন এলাকা সুবা বাঙলার ফতেহাবাদ সরকারের অধীনে ছিল।২১ ১৫৭৬ সাল হতে ১৬১১ সাল পর্যন্ত বাংলা বিখ্যাত বারো ভূঁইয়াদের অধীনে ছিল। বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ছিলেন ফরিদপুরের চাঁদ রায়, কেদার রায়, বাকলার রামচন্দ্র ও ফতেহাবাদের কাজীজাদা।

মোগল আমলে মাদারীপুর মহকুমার উত্তর-পূর্বাংশ বিক্রমপুর পরগণা ও দক্ষিন-পূর্বাংশ ছিল ইদিলপুর পরগণাভুক্ত। সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে বিক্রমপুর পরগনার জমিদার ছিল মালখাঁ নগরের বসুরা এবং ইদিলপুর পরগনায় ছিল রায়েরা। বসুদের পর এ পরগণা নবাব আলীবর্দি খাঁ রাজা উপাধিতে ভূষিত করে রাজবল্লভ রায়কে অর্পণ করেন। জাজিরা থাকার বড় কৃষ্ণনগরের প্রাসাদ ছিল রাজা রাজবল্লভের। পদ্মা এ প্রাসাদ নিজ গর্ভে গ্রাস করে নিয়ে নাম পায় ‘কীর্তিনাশা’২২

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্র কাননের যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ্দৌলার পরাজয়ে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। ইংরেজ বণিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র মানদণ্ড রূপান্তরিত হয় রাজদণ্ডে। ১৮৮১ সালের জনগণনা কালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমগ্র সুবা বাংলাকে চারটি প্রাকৃতিক বিভাগ যথাক্রমে - পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ এবং পাঁচটি রাজস্ব বিভাগ যথাক্রমে - বর্ধমান বিভাগ, প্রেসিডেন্সি বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ, ঢাকা বিভাগ ও চিটাগং বিভাগে বিভক্ত করে। ঢাকা-জালালপুর জেলাধীন মাদারীপুর ঢাকা বিভাগের অধীনে ছিল।২৩

ব্রিটিশ-পূর্ব যুগে বাংলার প্রশাসন রাজস্ব, ফৌজদার ও বিচার এই তিনটি বিভাগের উপর ন্যস্ত ছিল। রাজস্ব সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন আমিন বা তহসিলদার। আমিন বা তহসিলদারের সীমানাকে বলা হত পরগণা। পরগণা কতকগুলো মৌজা, তালুক ও জমিদারি নিয়ে গঠিত ছিল। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন ফৌজদার। ফৌজদারের এলাকাকে বলা হত সরকার। বিচারের দায়িত্বে ছিলেন কাজী। কাজীর এলাকাকে বলা হত জেলা। এই পরগণা, সরকার ও জেলার প্রত্যেকটির নিজস্ব ও পৃথক সীমানা থাকলেও তা এমনভাবে নির্ধারিত ছিল যে, একের সীমানা অপরের সীমানার মধ্যে প্রবিষ্ট ছিল। ব্রিটিশ আমলে ফৌজদার,  বিচার ও রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষমতা একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার হাতে কেন্দ্রিভূত করা হয় এবং আগেকার পরগণা, সরকার ও জেলাকে সমন্বিত করে একটি প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে ডিস্ট্রিক্ট বা জেলা গঠিত হয়।২৪

❝পড়ুন — মাদারীপুর জেলার নামকরণ

১৭৭২ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্ব আদায়ের জন্য বাংলা প্রদেশকে ২৩ টি জেলায় বিভক্ত করে প্রতি জেলায় একজন ইউরোপীয় কালেক্টর এবং একজন দেশীয় দেওয়ান নিযুক্ত করেন। তিনি ফরিদপুর, যশোর ও খুলনা নিয়ে তহসিল বিভাগ গঠন করেন। ১৭৮১ সালে বাংলাকে ৩৫ টি জেলায় ভাগ করা হয়। ১৭৮৭ সালে জেলার সংখ্যা কমিয়ে আবার ২৩ টি করা হয়। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করলে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার উত্তর-পশ্চিম অংশ রাজশাহীর জমিদার ভুক্ত এবং বর্তমান মাদারীপুর জেলাসহ অবশিষ্ট অংশ একজন নায়েব নাজিমের অধীনে ঢাকা নেয়ামত এর অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময়ও এ অংশটি ঢাকা-জালালপুর জেলার সাথে যুক্ত হয়। জালালপুর পরগনার সীমানা সম্পর্কে ঐতিহাসিক এইচ. বেভারিজ তাঁর The District of Bakergonj It's History and statistics গ্রন্থে নিন্মোক্ত বর্ননা দিয়েছেন This Pargona Chiefly belongs to Faridpur; but there are portions of it in the north of Bakergonj and in Dacca. সিএস ও আরএস রেকর্ড অনুযায়ী মাদারীপুরের পশ্চিমাঞ্চল সদর থানার শিরখারা, বাহাদুরপুর, ধুরাইল, কুনিয়া ও দুধখালী ইউনিয়নের মধ্যে মোট ৩৬ টি মৌজা জালালপুর পরগনার অধীন ছিল।২৫ মাদারীপুরের পূর্বাংশ দীর্ঘকাল বিক্রমপুর পরগনার অধীন ছিল। 

১৭৯৭ সালে ঢাকা-জালালপুর জেলাকে ব্যবচ্ছেদ করে নং রেগুলেশন দ্বারা বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন বর্তমান মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা, বাগেরহাট জেলার একাংশ, গোপালগঞ্জ জেলা, পটুয়াখালী জেলা ও হাতিয়া বাকেরগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৫০ সালে লর্ড ডালহৌসি (১৮৪৮-৫৬) ঢাকা জেলাকে ভেঙ্গে ফরিদপুর জেলার সৃষ্টি করেন। এ এলাকায় জলদস্যুতা বৃদ্ধি পেলে তা প্রতিরোধ কল্পে ১৮৫৪ সালে মাদারীপুর মহকুমা গঠন করা হয়। মাদারীপুর ছিল বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম মহকুমা। তখন এ মহকুমার অধিনে ছিল মাদারীপুর সদর, গোপালগঞ্জ, রাজৈর, কালকিনি, শিবচর, পালং, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট থানা। মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসন আড়িয়াল খাঁ নদীর দুই পারে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে বিভক্ত ছিল এবং দু'অংশের প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দু'জন আইসিএস অফিসার নিযুক্ত ছিলেন।২৬

কথিত আছে,  ১৮৪৫ সালে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার জজ সিরিটার মফঃস্বল  পরিদর্শনে এলে গোবিন্দপুরের নিকটে আড়িয়াল খাঁ নদে বজরায় অবস্থানরতকালে একদল ডাকাত দ্বারা আক্রান্ত হন। বজরায় মাঝি মাল্লারা ডাকাতদের আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। সিরিটার জেলায় ফিরে এসে জননিরাপত্তা বিধান কল্পে আড়িয়াল খাঁ নদীতীরে একটি মহকুমা স্থাপনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বছর পর ১৮৫৪ সালের নভেম্বর মাদারীপুর মহকুমা গঠন করা হয়। মহকুমা সদর দপ্তরের জন্যে মাদারীপুর গ্রামটি মনোনীত হয় এবং এখানে একটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন গৌরদাস বসাক। তিনি অধিকাংশ সময় বরিশাল শহরে অবস্থান করতেন। ১৮৫৭ সালে আবাস গৃহ নির্মিত হলে জে.এ রিকেট সাবডিভিশনাল অফিসার হিসেবে মাদারীপুরে আগমন করেন। বাকেরগঞ্জ জেলার অধীন থাকাকালে বুড়ীরহাট কোটালীপাড়া, মূলফৎগঞ্জ এবং শিবচর থানার কতকাংশ এই মহকুমার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬৬ সালে মূলফৎগঞ্জ ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ মহকুমা হতে খারিজ হয়ে মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হয়।২৭ ১৮৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাদারীপুর মহকুমাকে বাকেরগঞ্জ জেলা থেকে কেটে এনে ফরিদপুর জেলা ভুক্ত করা হয়।২৮ ১৯০৯ সালে ফরিদপুর জেলার সদর মহকুমা থেকে মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী, মাদারীপুর মহকুমা থেকে গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া থানা বিযুক্ত করে গোপালগঞ্জ মহকুমা সৃষ্টি করা হয়। ১৯৭৭ সালের নভেম্বর মাদারীপুর মহকুমার পালং, জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট থানাকে পৃথক করে শরীয়তপুর নামে একটি নতুন মহকুমা গঠন করা হয়। ১৯৮৪ সালে ১ মার্চ মাদারীপুর মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মাদারীপুর ফরিদপুর জেলাধীন একটি মহকুমা ছিল এবং বর্তমান শরীয়তপুর জেলার উপজেলাসমূহ মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত ছিল।  আড়িয়াল খাঁ, কুমার ও পালরদী এ জেলার প্রধান তিন নদী। মাদারীপুর জেলা শহর আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে অবস্থিত। এককালে মাদারীপুর মহকুমা শহর এবং মিউনিসিপ্যালিটি এলাকা ছিল ১১৪ নং মৌজায়, যার উত্তরে ছিল পাঁচখোলা ইউনিয়নের রাস্তি ও লক্ষ্মীগঞ্জ গ্রাম এবং দক্ষিণে তরমুগরিয়া ও কুকরাইল গ্রাম।২৯ ১৯৩৫ সালে মাদারীপুর পুরান শহরে নদী ভাঙন শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৪৬ সালে। ১৯০১ সালে লক্ষ্মীগঞ্জে নির্মিত মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসনের সকল পাকা স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে ১৯৪২ সালের দিকে শকুনি মৌজায় সদ্য খননকৃত লেকের পাড়ে নতুন শহরের অফিস আদালত ভবন পুনরায় নির্মিত হয়।৩০

তথ্যসূত্র : “মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুর”, লেখক—বেনজীর আহম্মদ টিপু, সার্বিক সাহিত্য প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ—আগস্ট ২০১৪, পৃষ্ঠা—(৩৭,৩৮,৩৯,৪০)

ধন্যবাদ...💌

Post a Comment

0 Comments